প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে স্যোসিওলজি এন্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে.
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো বিশ্ববিদ্যার স্থান। এখানে প্রচুর বিষয় পড়ানো হয়। বিষয়গুলো বর্র্তমানে এতই বিশেষায়িত, সূক্ষ্ম ও গভীর যে, এক বিষয়েই এত শাখা-প্রশাখা আছে যে, শিক্ষার একদম উপরিস্তরে এক বিশেষায়িত শাখার ছাত্র অন্য বিশেষায়িত শাখাটিকে বুঝতে পারে না। সমাজবিজ্ঞান ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়টিও এখন এত শাখা-প্রশাখায় বিস্তার ও বিশেষায়িত রূপ লাভ করেছে যে, তার উপরিস্তরে এক শাখার ছাত্র বা গবেষক অন্য শাখার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়গুলো সম্পর্কে তেমনকিছুই জানে না, জানতে আগ্রহী হতে পারে না। কিন্তু তোমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে যা পড়ছো সেখানে তোমাদের এই বিষয় সম্পর্কে একটা মৌল ধারণা দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে তোমরা সমাজকে, সমাজের বিভিন্ন বিষয়কে বুঝতে, জ্ঞান আহরণ করতে সক্ষম হবে। পরবর্তীকালে তোমাদের জ্ঞান যখন আরও অনেক উপরিস্তরে উঠবে, তখন হয়ত তোমরা একটি বিষয় নিয়ে তোমাদের গবেষণা করবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে অন্যান্য বিষয়ের মতো সমাজবিজ্ঞান ও টেকসই উন্নয়ন বিভাগে যে-শিক্ষা তোমরা আহরণ করছো বা করবে, তা তোমাদের আজকের বিশ্বসমাজকে, বাংলাদেশের সমাজকে বুঝতে এবং তাদের আন্তঃসম্পর্ক বুঝতেও সাহায্য করবে। উদাহরণস্বরূপ বলা চলে, বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রমশ গ্রাম্য সমাজ থেকে, কৃষক সমাজ থেকে নগরায়িত ও শিল্প-সেবাভিত্তিক সমাজে রূপান্তরিত হচ্ছে। তার ফলে নতুন নতুন সামাজিক সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে। উন্নয়ন নানা পথে অগ্রসর হয়, যার প্রভাব সমাজে নানাভাবে পড়ে। যতই তোমাদের সমাজবিজ্ঞান ও টেকসই উন্নয়ন পাঠ অগ্রসর হবে, ততই তোমাদের সমাজকে বোঝার ও দেওয়ার নানা ক্ষেত্র উন্মোচিত হবে। এইসব সমস্যাকে উপলব্ধি করে তার সমাধানেও তোমাদের ভূমিকা রাখতে হবে। বাংলাদেশে এখনও প্রায় ৪কোটি লোক দারিদ্রসীমার নিচে রয়েছে। তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে একজন সমাজবিজ্ঞানীর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বৃহস্পতিবার, সকাল ১১টায় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির জিইসি মোড়স্থ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত স্যোসিওলজি এন্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ৭ম ব্যাচের ‘ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম ফল ২০২২’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি পরিবার, রাষ্ট্র ও ধর্মকে সমাজের তিনটি মুখ্য প্রতিষ্ঠান বলে অভিহিত করেন।
কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহীত উল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাননীয় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা, মাননীয় ট্রেজারার প্রফেসর একেএম তফজল হক। এছাড়াও বক্তা ছিলেন বিভাগের কো-অর্ডিনেটর ড. সাদিকা সুলতানা চৌধুরী। স্বাগত বক্তা ছিলেন বিভাগের শিক্ষক তানিয়াহ্ মাহমুদা তিন্নি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা নবীনদের উদ্দেশ্যে বলেন, উন্নয়ন ছাড়া মানুষের বিকাশ, সামাজিক বিকাশ সম্ভব নয়। সুতরাং টেকসই উন্নয়নের গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি নবীনদের বলেন, কলেজ পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে যে-স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়া যায়, তা এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব তোমাদের।
ট্রেজারার প্রফেসর একেএম তফজল হক বলেন, উন্নয়নের সঙ্গে যদি সমাজ ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন না হয়, যদি সেই উন্নয়ন টেকসই না হয়, তাহলে সেই উন্নয়ন যথাযথ হয় না।
স্যোসিওলজি এন্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষক অর্পা পালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম বলেন, মানবজীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো বর্তমান। জীবনকে এগিয়ে নিতে হলে, ভবিষ্যৎজীবন উজ্জ্বল করতে হলে বর্তমানকে অবশ্যই যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে নবীন শিক্ষার্থীদের প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির কোড অব কন্ডাক্ট সম্পর্কে বলেন প্রক্টর আহমদ রাজীব চৌধুরী। কেক কেটে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করার পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।